চা পাতার ব্যবসা শুরু করুন অল্প পুজিতে
বর্তমানে আমাদের দেশে অল্প মূলধন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের লাভজনক ব্যবসা করা যায়। যে ব্যবসাগুলো আপনি ঘরে বসেই করতে পারেন অল্প পুজিতে। তার মধ্যে অন্যতম ব্যবসা হলো চা পাতার ব্যবসা। কিভাবে শুরু করবেন চা পাতার ব্যবসা.?, কি কি প্রয়োজন হবে.?, মূলধন কত লাগবে.?, ব্যবসার ঝুকি.? এই সব প্রশ্ন যদি আপনার মাথায় ঘোরো তাহলে আপনার জন্য আমাদের এই লেখাটি। এই লেখাতে চা পাতার গ্রেড, কালার ও ব্যবসার সকল তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি সম্পুর্ন লেখাটি পড়লে আপনি চা পাতার ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ইতিহাস :
চা পাতার যাত্রাটা শুরু হয় চীনে, কারন চা প্রথম আবিস্কার করা হয় চীন দেশে। বাংলাদেশে চায়ের শুরুটা হয় ১৮৪০ সালে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৬৭ টি চা বাগান রয়েছে। বাংলাদেশে উৎপাদনকৃত চায়ের ৭৫ শতাংস উৎপাদন করা হয় সিলেটে। তাই সিলেটকে চা কন্যার দেশও বলা হয়। আপনারা যারা চা ব্যবসার করার আইডিয়া খুজছেন ৷ কিন্তু আপনি কি জানেন চা পাতা কেনার আগে ব্যবসায়ীদের জন্য কালার টেস্টিং এবং চায়ের গ্রেড জানা দরকার ৷
অনেক নতুন উদ্যোক্তা রয়েছে যারা চা পাতার ব্যবসা করতে চান ৷ কিন্তু তারা বুঝে শুনে উঠতে পারে না কোনটা তাদের এলাকায় চলবে ৷ চা পাতার কালার, গ্রেড ও স্বাদ এই বিষয়গুলো নিয়ে আজকের এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে ৷ যারা নতুন উদ্যোক্তা হয়ে চায়ের ব্যবসা করতে চান তাদের জন্য এই ভিডিওটি আশা করি অনেক হেল্পফুল হবে। দয়া করে সম্পুর্ন ভিডিওটি দেখার অনুরোধ রইলো।
চায়ের গ্রেড কি ?
বাংলাদের সংস্কৃতি আর অঞ্চলভিত্তিক সব অঞ্চলে এক রকম চা চলে না। তাই চায়ের বিভিন্ন গ্রেড হয়ে থাকে। গ্রেড অনুসারে চায়ের টেষ্ট, কালার ও দাম বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তাই চা ব্যবসা শুরু করার আগে একজন উদ্দোক্তা হিসাবে আপনার জানা উচিত চায়ের গ্রেড সম্পর্কে। কোন অঞ্চলে সিডি ডাস্ট কোন অঞ্চলে জিবিওপি, ওফ, পিফ, বিওপি, পিডি সহ আরও নানা নামের, নানা রকম চা চলে। তবে ব্লাক টি সব অঞ্চলেই চলে। এই সব বিষয় মাথায় রেখে আপনাকে প্রথমে জানতে হবে আপনার এলাকায় কোন চায়ের চাহিদা আছে।
চায়ের বিভিন্ন গ্রেড সমূহ :
চায়ের গ্রেড বের করা হয় সাধারনত চায়ের টেষ্ট অনুসারে। আমরা জানি দুটি কুড়ি ও একটি পাতা থেকে চা তৈরি হয়। তবে এই পাতার মানে বেশ কিছু পার্থক্য আছে, যা চায়ের টেষ্ট ও কালারে পার্থক্য তৈরি করে। তাই উৎপাদন পদ্ধতির ভিত্তিতে চা কে সাধারনত বিভিন্ন গ্রেডে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন : TGFBOP গ্রেড, OP, FOP গ্রেড। এখানে পার্থক্যটা হলো বড় গাছের পাতার চেয়ে নতুন গাছের কচি পাতা বা কুড়ি পাতায় ক্যাফেইনের মাত্রা বেশী থাকে। তাই চায়ের স্বাদ ও গন্ধে বিভিন্নতা পাওয়া যায়। চলুন এবার জেনে নেই চায়ের বিভিন্ন গ্রেড সম্পর্কে :
• সম্পূর্ণ পাতার চা (Whole leaf tea) :
TGFOP - Tippy Golden Flowery Orange Pekoe
TGFOP1 - Tippy Golden Flowery Orange Pekoe Grade One
GFOP - Golden Flowery Orange Pekoe
FOP - Flowery Orange Pekoe
FTGFOP1 - Fine Tippy Golden Flowery Orange Pekoe Grade 1
FTGFOP - Fine Tippy Golden Flowery Orange Pekoe
OP - Orange Pekoe
OPA - Orange Pekoe A
FP - Flowery Pekoe
P - Pekoe
S – Souchong
• অল্প ছেঁড়া পাতার চা (Broken leaf tea):
TGFBOP - Tippy Golden Flowery Broken Orange Pekoe
TGFBOP1 - Tippy Golden Flowery Broken Orange Pekoe Grade One
BS - Broken Souchong
BPS - Broken Pekoe Souchong
GBOP - Golden Broken Orange Pekoe
FBOP - Flowery Broken Orange Pekoe
BOP1 - Broken Orange Pekoe One
GFBOP - Golden Flowery Broken Orange Pekoe
BOP - Broken Orange Pekoe
• অপেক্ষাকৃত বেশি অংশ ছেঁড়া চা পাতা যা Fannings নামে পরিচিত। যেমন :
GOF - Golden Orange Fannings
BOPF - Broken Orange Pekoe Fannings
FBOPF - Flowery Broken Orange Pekoe Fannings
• দানা, গুড়া বা (Dust) ডাস্ট চা এগুলো থেকেই টি-ব্যাগের উৎপত্তি হয়। যেমন :
OPD - Orange Pekoe Dust
FD - Fine Dust
D-A - Dust A
Spl. D - Special Dust
GD - Golden Dust
OD - Orthodox Dust
BOPD - Broken Orange Pekoe Dust
BOPFD - Broken Orange Pekoe Fine Dust
FOF - Flowery Orange Fannings
আপনি যদি চা প্রেমি হয়ে থাকেন, আর সকালের নাস্তার সাথে পারফেক্ট একটা চা চান তাহলে উপরোক্ত গ্রেড সমূহের মধ্যে B দিয়ে শুরু এই গ্রেডের চা পাতা কিনতে পারেন। এই চা গুলো সাধারনত ঝরঝরে দানার হয়, চায়ের রংটা সুন্দর হয়। রং চা খাওয়ার জন্য এই চা গুলো বেষ্ট।
চা পাতার ব্যবসার ঝুকি :
সব ব্যবসায় কিছু না কিছু ঝুকি থাকেই। তাই বুঝে শুনে ব্যবসায় নামা উচিত। ঝুকি এড়াতে আগে নিজের এলাকার মার্কেট নিয়ে বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করুন। চা যেহেতু পাতা থেকে তৈরি হয় তাই বিভিন্ন কোম্পানির চা বিভিন্ন রকম হয়। যেমন : কোন চায়ে লিকার বেশী হয়, কোন চায়ে লিকার কম হয়, এক এক চায়ের স্বাদ এক এক রকম হয়। তাই ব্যবসার ঝুকি এড়াতে চায়ের গ্রেড, কালার ও স্বাদ বুঝে শুনে চা পাতা ক্রয় করুন।
শেষ কথা :
উপরোক্ত সকল বিষয়সমূহ মাথায় রাখলে ইনশাআল্লাহ অল্প পুজি দিয়ে চা ব্যবসা শুরু করে আপনিও সফল হবেন। আপনি চেষ্টা করুন আর সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন। আশা করি আমাদের এই লেখাটি আপনাদের জন্য হেল্পফুল হবে। তবুও যদি আপনাদের মনে চা পাতার ব্যবসা নিয়ে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমাকে। চা পাতার ব্যবসা নিয়ে অনেক ভিডিও আছে আমাদের ইউটিউব এ, চাইলে ঘুরে আসতে পারেন :
কোন মন্তব্য নেই